বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে কোনো ব্যক্তির জানমালের ক্ষতি হলে এটি নিছক
দুর্ঘটনা ভাবার কোনো সুযোগ নেই। বেপরোয়া ও অবহেলা করে গাড়ি চালানো এবং এর
ফলে কারও ক্ষতি হলে আইনের চোখে তা স্পষ্ট অপরাধ। শুধু যে অপরাধ তা কিন্তু
নয়, এর জন্য শাস্তি অবধারিত এবং দায়ী চালক বা ব্যক্তি, বাসমালিকদেরও গুনতে
হবে ক্ষতিপূরণ।
গুনতে হবে ক্ষতিপূরণসম্প্রতি রাজধানীতে দুই বাসের ফাঁকে আটকে পড়া রাজীব হোসেনের ডান হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট বিভাগ ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে রাজীব হোসেনের চিকিৎসা ব্যয় ওই দুই বাসমালিককে বহন করতে নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মধ্যরাতে মারা যান রাজীব।
রাজধানীর
নিউ মার্কেট এলাকায় বিকাশ পরিবহনের দুই বাসের চাপায় মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে
যাওয়া গৃহবধূ আয়েশা খাতুনের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সরকারের তিন
সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট বিভাগ। হাইকোর্ট বিভাগ এ দুর্ঘটনায় দায়ী
চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্সও বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্ট বিভাগের এ
দুটি আদেশ থেকে এটা স্পষ্ট যে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা করে
কোনো রেহাই পাওয়া যাবে না। মোটরযান অধ্যাদেশের ১২৮ ধারা অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ
চাওয়ার বিধানও রয়েছে।গুনতে হবে ক্ষতিপূরণসম্প্রতি রাজধানীতে দুই বাসের ফাঁকে আটকে পড়া রাজীব হোসেনের ডান হাত বিচ্ছিন্ন হওয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট বিভাগ ক্ষতিপূরণ কেন দেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন। একই সঙ্গে রাজীব হোসেনের চিকিৎসা ব্যয় ওই দুই বাসমালিককে বহন করতে নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মধ্যরাতে মারা যান রাজীব।
শাস্তিদণ্ডবিধির ২৭৯ ধারা অনুযায়ী, যদি কোনো ব্যক্তি জনসাধারণের ব্যবহৃত কোনো সড়কে বেপরোয়া বা অবহেলামূলকভাবে কোনো গাড়ি চালান, এর ফলে যদি মানুষের জীবন বিপদাপন্ন হয় কিংবা কোনো ব্যক্তির আহত বা জখম হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়, তাহলে দায়ী চালকের জন্য শাস্তি অবধারিত। এ শাস্তির পরিমাণ হবে তিন বছর পর্যন্ত যেকোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ড। সর্বনিম্ন এক থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড। দণ্ডবিধির ৩৩৮ ক ধারা অনুযায়ী যদি কেউ বেপরোয়া বা অবহেলা করে জনপথে গাড়ি চালিয়ে কোনো ব্যক্তিকে গুরুতর আঘাত করেন, তাহলে দায়ী ব্যক্তিকে দুই বছর পর্যন্ত জেল বা জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
মোটরযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বেপরোয়া বা বিপজ্জনক গাড়ি চালানোর শাস্তি
হচ্ছে ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ড। এর সঙ্গে গাড়ি
চালানোর লাইসেন্সও নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। এ অপরাধ একই
চালক তিন বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার করলে তাঁকে ছয় মাস কারাদণ্ড কিংবা এক
হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে। সঙ্গে গাড়ি
চালনার লাইসেন্সও এক মাস পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। যদি চালক শুধু দুর্ঘটনা
ঘটান, তাহলে মোটরযান আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন মাস কারাদণ্ড বা ৫০০ টাকা
জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যদি একই অপরাধ আগেও ঘটানো হয়েছে এটা
প্রমাণিত হয়, তবে ছয় মাস কারাদণ্ড অথবা এক হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়
দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। দণ্ডবিধির ৩০৪ খ ধারা অনুযায়ী বেপরোয়া গাড়ি চালালে এবং
এর ফলে নরহত্যা নয় কারও এমন মৃত্যু হলে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড বা
অর্থদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
লেখক: আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট।prothomalo
only for the rule declaration but not yet execution
ReplyDelete